০১ জুলাই ২০১৫

রোম্যান্টিক মুভি -

সবাইকে রোম্যান্টিক কিছু মুভি দেখার দাওয়াত ।।
জুলিয়া রবার্টস আর রিচার্ড গেরের রোম্যান্টিক ছবি ‘প্রিটি ওম্যান’ । যৌনকর্মী ভিভিয়ানের সঙ্গে দেখা হয় ধনী ব্যক্তি জনের ৷ মামুলি দেখা থেকে তৈরি হয় সিনেদুনিয়ার অন্যতম সেরা রোম্যান্টিক ছবি ৷ ভিভিয়ান হয়ে জুলিয়া রবার্টস আর জন রূপী রিচার্ড গেরের অনবদ্য রয়ায়নে ‘প্রিটি ওম্যান’ আজও জনপ্রিয় ৷
শুধুমাত্র একটা রাত, জীবন এবং সব কিছুকে কিভাবে বদলে দিতে পারে Before Sunrise মুভিটি আপনাকে বলে দিবে ।একজন আমেরিকান তরুন তার ইউরোপ ভ্রমণের সময় ট্রেনে পরিচয় হয় ফরাসি তরুণীর সাথে । কিছুক্ষন কথা বলার পরেই তারা অনেকটা খেয়ালের বশেই সিদ্ধান্ত নেয় একটা রাত ভিয়েনার রাস্তায় কাটাবে ! মাত্র একটা রাত, ভিয়েনার রাস্তা, দুজনের কথা, অনেকটা দুজনের অজান্তেই ভালবেশে ফেলা !  আর তারপর.................................... 

Before Sunrise এর পরের পর্ব Before Sunset. ভিয়েনায় একসাথে কাটানো সেই রাতের নয় বছর পর আবার দেখা হয় তাদের। নয় বছরে বদলে গেছে অনেক কিছু । একজন এখন বিখ্যাত লেখক এবং বই প্রকাশের জন্যে আসে প্যারিসে, দেখা হয়ে যায় । বদলে গেছে জীবনও কিন্তু নয় বছর আগের সেই রাতের অনুভুতি কি বদলে গেছে ! নাকি এখনও আগের মতই আছে ? এতদিন পর যখন আবার দেখা হল তখন সময় নেই ! সন্ধার পরেই যে চলে যেতে হবে, মাত্র কয়েকটা ঘণ্টা সময় আছে হাতে । কি করবে ওরা ? ওরা কি পারবে এই অল্প সময় টুকু নিজেদের করে নিতে ? সেই রাত টার মতো ?

জি পি এ -৫:

ছোট্ট শিশুটিকে পাবলিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করতে হিমশিম বাবা মা । জীবনের সুন্দর সময়গুলো মুখস্থ করার পেছনে ব্যয় করে বাচ্চারা। বেশিরভাগ বাবা মা পড়ার ক্ষতি হবে মনে করে বাচ্চাকে মাঠে খেলতে যেতে দেয়না । ধরে বেঁধে পড়ার টেবিলে নিয়ে যায়, লক্ষ্য বাচ্চাকে ডাক্তার, কবিরাজ, ইঞ্জিনিয়ার বানাবে । বাচ্চাদের পড়াশুনার কথা চিন্তা করে আত্মীয় স্বজনের বাড়ি পর্যন্ত বেড়াতে যায়না । প্রশ্ন পত্র ফাঁস হলে এই বাবা মাদের এত পরিশ্রম এত ত্যাগ স্বীকার সবচেয়ে আমাকে বেশি কষ্ট দেয় । যে বাচ্চাদের হাতে তৈরি হবে এক আশ্চর্য পৃথিবী তাদের হাতে তুলে দিচ্ছি নষ্ট পথের ভ্রমন টিকিট ( ফাঁস প্রশ্ন পত্র )। সৃজনশীল পদ্ধতির শিক্ষা ব্যাবস্থা চাই অথচ সৃজনশীল শিক্ষক তৈরি করতে চাইনা । শিক্ষাব্যবস্থায় পরীক্ষাগুলোর মূল লক্ষ্যই হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীদের মুখস্থ ক্ষমতা যাচাই করা । স্কুলগুলো পরীক্ষা আর জিপিএ–৫–এর পেছনে দৌড়ানোর জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ব্যতিব্যস্ত করে তোলে, পরীক্ষার আগে প্রশ্ন পত্র ফাঁস করে কমল মতি শিক্ষার্থীদের জিপিএ–৫ পাইয়ে দিয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের বাহবা কুড়ায়। কারণ, তাদের নিজেদের মূল্যায়নও সরকার ওই জিপিএ–৫ দিয়েই করে। সরকার কিংবা স্কুলের কথা শুনলে মনে হয় জিপিএ–৫–ই জীবনের সব। ‘মিনি কী করে’—এই প্রশ্নের উত্তরে এক শিক্ষার্থী লিখল: মিনি মুখে করে বাবার জুতা ড্রয়িং রুম থেকে বারান্দায় নিয়ে যায়। এই উত্তরে শিক্ষার্থীর পর্যবেক্ষণ এবং তা প্রকাশের চমৎকার নিদর্শন পাওয়া গেলেও শিক্ষক তার খাতায় শূন্য দিবে : মিনি রান্নাঘরে মাছের কড়াইয়ে মুখ দিয়ে মাছ চুরি করে এমন উত্তরে তাকে দশে দশ দেওয়া হত । বেচারা শিক্ষার্থী তাদের বাড়ির বিড়ালটিকে কখনো এই কাজটি করতে দেখেনি, যা দেখেছে তা লিখেছে কিন্তু তাতে তাকে মূল্যায়ন করা হবে না । ঠিক এভাবে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার বারোটা বাজাই। এ জন্যই বাচ্চারা কখনো সিলিং ফ্যানের দিকে তাকিয়ে দেখে না, সেটা ঘড়ির কাঁটার দিকে না উল্টা দিকে ঘোরে, গোধূলিবেলায় মেঘের ওপর মেঘ করে কি না, গাছে পাকা পেয়ারা বেশি মিষ্টি নাকি কেমিক্যাল দিয়ে, পিঁপড়া কি সাঁতার কাটতে পারে ? আমরাও বাচ্চারা যদি আমাদের এসব প্রশ্ন করলে তাকে থামিয়ে দেই। বলি, এসব কি তোমার পরীক্ষায় আসবে ? ফাঁস হওয়া প্রশ্নই শুধু পরীক্ষায় আসবে । আইনস্টাইন যদি না বুঝে মুখস্থ করতেন, আইনস্টাইনকে যদি ফাঁস প্রস্ন পত্র দিয়ে শুধু জি পি এ -৫ পাওয়ার জন্য পড়ত তাহলে কি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটিত হতো ??

 প্রকৃতি অসমতা পছন্দ করে না:

প্রকৃতি শূন্যস্থান পছন্দ করে না । প্যাসকেলের সূত্র, বায়ুর চাপ বিজ্ঞানের এই বিষয়গুলো বোঝানোর সময় আমার হাই স্কুলের প্রিয় শিক্ষক কালাম স্যার প্রায়ই এই কথাটি বলতেন । কালাম স্যার আমার কাছে দার্শনিক তুল্য এবং আমার কাছে মনে হয় প্রকৃতি অসমতাও পছন্দ করে না ।

দুপুরে আইডিবি ভবন থেকে আগার গাঁ চৌরাস্তার দিকে যেতে হঠাৎই চোখ আটকে যায় ফুটপাথের পাশে ভ্যানে করে ফেরিওয়ালা এক দশ বারো বছরের ছেলের খাবার খাওয়ার দিকে। আশপাশে তেমন কোনো কোলাহল নেই। ফাঁকা জায়গায় পরিষ্কার ফুটপাথের ওপর বসে এমন তৃপ্তি করে কারও খাবার খাওয়ার দৃশ্য আমার জীবনের দেখা সবচেয়ে তৃপ্তির আহার দৃশ্য । ওখানে ছেলেটির দোকানের কাছাকাছি ফুটপাথের ওপর চায়ের দোকানে টুলে বসে অলস আড্ডায় সময় কাটাচ্ছেন কিছু স্কুল কলেজ পড়ুয়া যুবক । আমি টুলটাতে বসে কাঁচা লিকার চিনি কম দিয়ে একটা আদা চা অর্ডার দিয়ে একটু দূরে ওই ছেলেটির আহার দৃশে একটু একটু করে মুগ্ধ হচ্ছি । ছেলেটি একটা প্লাস্টিকের লাল রঙের বাটি খুলল । বাটিতে মোটা চাউলের সাদা ভাত, ভাতের উপরে একটি চিংড়ি মাছ আর একটু ঝোল । অনুভূতি অদ্ভুত, প্রথমে জিহ্বার ডগায় শল্পিক ভাবে স্পর্শ করাল । সারা শরীর যেন কী এক অনুভূতিতে চনমন করে ওঠে, শিরা-উপশিরায় ছড়িয়ে যায় একটা ঠাণ্ডা শিরশিরে তরলতা । এতগুলো ভাত আর এক টুকরো চিংড়ি মাছ, আমার ইন্দ্রিয়ের সকল দৃষ্টি এর পরবর্তী দৃশপট দেখার প্রতীক্ষায় । ছেলেটি চিংড়ীটাকে কিনারে অর্থাৎ যেখানে ভাত আর বাটি মিলিত হয়েছে সেখানে কাত করে রেখে দিল । ঝোল দিয়ে আঙ্গুলের নাড়ানীতে সে লোকমাগুলো মুখে পুড়ছিল আর চিংড়ীটায় জিহ্বা ছুঁয়ে দিয়ে আবার নির্দিষ্ট জায়গায় রাখছিল এবং প্রতিটাই দেখার মতো । একটু পাশ দিয়েই সাঁই সাঁই ছুটে চলছে মিরপুর, ফার্মগেট, উত্তরা, মতিঝিল, গুলিস্থান, সদরঘাট গামী যান্ত্রিক যান । ছুটে চলা মানুষের চীৎকার কোলাহল কোন কিছু তার সেই মুহূর্তের জগতকে ভাংতে পারছে না । শুধু ক ফোঁটা ঝোল দিয়েই দুই তৃতীয়াংশ ভাত খেয়ে ফেলল । ধীরে ধীরে চিংড়ীর মাথা খেল, দেহ খেল এবং পুরোটা ভাত খাওয়ার পরে চিংড়ীর লেজটায় চুষুক দিয়ে শান্তিময় অনুভূতিতে চোখ দুটো বন্ধ করল । আহঃ আমার এই শেষ দৃশটি কবরে যাবার আগ পর্যন্ত ভুলবো না । নিজে আমি অনেক দামী রেস্টুরেন্টে, ফাইভ স্টার হোটেলে অনেক দামী খাবার খেয়েছি এবং অনেকের খাবার খাওয়া দেখেছি কিন্তু ফুটপাথের ওই তৃপ্তি দেখতে পাই নাই কখনও । সৃষ্টি কর্তা অনেককে বাটি ভর্তি গলদা চিংড়ী, বাগদা চিংড়ী প্রতিদিন খাওয়ার পয়সা দিয়েছে কিন্তু ডাক্তার বলেছে তুমি কি বাঁচতে চাও না চিংড়ী খেতে চাও ?? 

আসলে প্রকৃতি অসমতা পছন্দ করে না । তার হিসাব আমরা লগ, ফাংশন, ক্যালকুলাস, জিওমিট্রি, বীজগণিত, পাটীগণিত দিয়ে করতে পারবোনা ।।।